জুয়েল বিন জহির
মান্দি জাতির দাকবেওয়ালে (সংস্কৃতিতে) একসময় গালমাকদু.আ ছিল এক অতি পরিচিত নাম। গালমাকদু.আ হলো হাবাহু.আ (জুম চাষ) কেন্দ্রিক বিভিন্ন দেব-দেবীর উদ্দেশ্য কৃত্য বিভিন্ন আমুয়া (পূজা)-র সমন্বয়ে সামষ্টিক এক উৎসব। গত ১৮-২০ মার্চ ২০০৪ মধুপুর শালবনের চুনিয়া গ্রামের সাংসারেক-দের উদ্যোগে প্রায় ৫০ বছর পর আবার পালিত হলো গালমাকদু.আ। বহু আগে মধুপুরের মান্দিরা যখন শালবনে প্রথম বসতি স্থাপন করে তখন থেকেই শালবন তাদের জীবন -জীবিকা, সংস্কৃতি-জীবনবোধ সব কিছুর সাথেই এক নিবিড় যোগসূত্রে বাধা পড়ে। শালবন তাদের হাবিমা (জননী ভূমি)। সেই হাবিমা-তে একসময় ছিল তাদের অবাধ বিচরণ; সেখানে তাদের বাধা দেবার কেউ ছিলনা। জীবন ধারনের জন্য সমস্ত কিছুই তারা পেত শালবন থেকে। শালবনে হাবাহু.আ (জুম চাষ)-র মাধ্যমে পেত ইচিং (হলুদ), আ.খারু (লাউ), ফং, রাও (লাউ জাতীয়), গোমেন্দা (এক ধরনের কুমড়া), থা.বালচু(শিমলাই আলু) সহ নানান সবজি ও মসলা, খিল (কার্পাস) এবং মি.সারাং, মি.খচ্চু, মি.মা, মি.নেংগেল, মি.মদুম, মি.মাথেক, মি.জেংগেম,অদুবালী ইত্যাদি নানান জাতের মি.মান্দি (মান্দিদের জুম ধান)। শালবনের হলুদাভ-লালচে মাটি খুঁড়ে সংগ্রহ করত থা.স্থেং, থা.থুরাক, থা.চিচাং, থা.দিক, থা.রুরি, থা.জং, থা.মান্দি, থূা.গিচ্চাক, থা.দামবং প্রভৃতি বিভিন্ন ধরনের বন আলু। এছাড়া বিভিন্ন অসুখ-বিসুখেও নানান প্রজাতির গাছ-গাছালির জন্য তারা নির্ভর করত বলশাল ব্রিং বা শালবনের উপর। তাদের নিজস্ব সাংসারেক ধর্ম ও ধর্ম কে আশ্রয় করে যে দাকবেওয়াল ছিল স্বমহিমায় ও স্বাতন্ত্রতায় পূর্ণ, তাকে তখনো অশূচি করতে পারেনি ভিন দেশী ধর্ম ও সেই ধর্ম আশ্রিত সংস্কৃতি বা অন্যান্য আগ্রাসী অপশক্তি । তখন হাবাহু.আ কে কেন্দ্র করে হাসিরক্কা, দক্মারাঙা, হাবাসুয়া, গালমাকদু.আ, রংচুগালা, ওয়ান্না পালন করা ছিল মান্দি সংস্কৃতির এক স্বাভাবিক ও অবশ্য পালনীয় বিষয়। গালমাকদু.আ-তে জুমের ফসল যাতে খুব ভালো হয় এবং প্রাকৃতিক বা অতিপ্রাকৃতিক দূর্যোগ যাতে ফসল এবং মান্দিদের কোনরুপ অনিষ্ঠ সাধন করতে না পারে সেজন্য বিভিন্ন দেব-দেবীর যেমন:পচ্চিম, রাক্কাশি, চুরাবুদি, জগু, বাগবা, গুইরা, মিসি সালজং, সুসিমি সালজং, তাতারা ইত্যাদির সন্তুষ্টি কামনায় আমুয়া (পূজা) করা হতো। গালমাকদু.আ কে কেন্দ্র করে পুরো সমাজেই তৈরী হতো এক উৎসবের আমেজ। আদুরি, রাং, খ্রাম, দামা, নাথোক-কের (মান্দিদের নিজসব বাদ্যযন্ত্র)সুরলহরীতে মুখরিত হতো পুরো গ্রাম। সারারাত ধরে নারী-পুরুষের সম্মিলিত দল বাদ্যের তালে তালে নানা রকমের ঐতিহ্যগত নাচ গান করত গ্রামের প্রতি বাড়ি বাড়ি গিয়ে। প্রতি বাড়িতেই অভ্যাগতদের চু (মান্দিদের নিজস্ব ক্লান্তিনাশক পানীয়) দিয়ে আপ্যায়িত করা হতো। বলি দেওয়া ওয়াক (শূকর) আর মি (ভাত) দিয়ে প্রধান ভোজ দেয়া হতো শাল বা কলাপাতায়।এভাবেই মান্দিরা তাদের হাবাহু.আ কেন্দ্রিক গালমাকদু.আ পালন করত টানা ২-৩ দিন ধরে। কিন্তু মধুপুরের মান্দিরা আজ আর সেই অবস্থায় নেই। যে শালবনে যুগযুগ ধরে তারা বসবাস করছে সেই শালবন তথা হাবিমা-র উপর তাদের কোন অধিকার নেই। তাদের হাবিমা-কে নিষ্ঠুর ভাবে করায়ত্ব করেছে তথাকথিত সভ্য মানুষের(!) সভ্য সমাজব্যবস্থা(!) নানান ভাবে নানান মোড়কে নানান নামে। মধুপুরের মান্দি জাতির হাবিমা-তে একসময় ছিল বিশাল বলশাল ব্রিং (শালবন) যেখানে মোট উদ্ভিদ প্রজাতির প্রায় ৭০-৭৫ শতাংশই ছিল বলশাল ফাং (শালগাছ) এছাড়াও ছিল আগাচি, মাহান্থি সহ কত কত বৃক্ষ প্রজাতি;ছিল অতি মূল্যবান বিভিন্ন প্রজাতির লতা, গুল্ম ও বীরুৎ জাতীয় উদ্ভিদরাজি। প্রাকৃতিক ভাবে বেড়ে ওঠা এই সব উদ্ভিদরাজির উপর নির্ভরশীল নানানজাতের নানান রংয়ের পাখী, বানর, হনুমান, হরিণ, চিতা সহ অন্যান্য অনেক বন্যপ্রাণিতে বলশাল ব্রিং-র জীববৈচিত্র্য ছিল অত্যন্ত সমৃদ্ধ। অথচ সাম্রাজ্যবাদী বিভিন্ন সংস্থার প্রেসক্রিপশনকৃত ইউক্যালিপটাস, মিন্জিয়াম, শিশু, লিউকেনা, সেড্রেলা, একাশিয়ার দাপটে বিপন্ন আজ বলশাল ব্রিং-এর ইন্ডিজেনাস উদ্ভিদ প্রজাতি বলশাল ফাং (শাল গাছ)। ব্রিটিশবেনিয়া-বনবিভাগ-রিজার্ভফরেস্ট-জাতীয় উদ্যান প্রকল্প-রেষ্টহাউজ-কটেজ-পিকনিকস্পট-বিমানবাহিনীর ফায়ারিংরেঞ্জ-হ্যালিপ্যাড-এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক-রাবারবাগান-উডলট-সোস্যালফরেস্ট্রি-কলাবাগান-আনারস বাগান- ইত্যাদি যাবতীয় কিছুই ধ্বংস করেছে এবং এখনো করছে প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠা বলশাল ব্রিং কে এবং ব্রিং কেন্দ্রিক বাস্তুসংস্থানকে (Ecosystem), জীববৈচিত্র্য( Biodiversity) কে; ধ্বংস করেছে মান্দি জাতির হাবিমা-কে, সর্বোপরি অশূচি করেছে মান্দি দেবী বাগবা-র পবিত্র কোলকে যার চিপাংফাকছা (গর্ভ) থেকে পৃথিবীর সমস্ত জীবের সৃস্টি হয়েছে বলে সাংসারেক মান্দিদের বিশ্বাস। নামে-বেনামে বিভিন্ন বহুজাতিক কোম্পানীর কল্যাণে এদেশে আমদানিকৃত বা তৈরীকৃত সুপারফিক্স, লিটোসেন, বায়োলিনফা, টম-টম৪০এসএল, প্রফিট ইত্যাদি নানান রকমের হরমোন; বিভিন্ন রসায়নিক সার এবং সানমেরিন, সানভেলারেট, ওস্তাদ১০ইসি ইত্যাদি হরেক রকমের কীটবিষের দাপটে দেবী বাগবা-র প্রজনন শক্তি আজ মারাত্বকভাবে বিপর্যস্ত, বিপন্ন। বিশ্বব্যাংক নামক সাম্রাজ্যবাদী সংস্থার অর্থায়ন ও সুপারিশে এবং এদেশীয় এজেন্টদের সহায়তায় বাস্তুতান্ত্রিক ভারসাম্য (Ecological balance) ও জীব বৈচিত্র্য (Biodiversity) রক্ষার (!) নামে নির্মিতব্য সুউচ্চ ইটের প্রাচীরে আজ শ্বাসরুদ্ধ হবার অবস্থা প্রকৃতির সন্তান মান্দিদের। জন্মের পর থেকেই যে মান্দি সন্তানেরা জীবন-জীবিকার প্রয়োজনে বলশাল ব্রিং-এর সাথে গড়ে তোলে অকৃত্রিম সখ্যতা সেই ব্রিং (বন)-এ বিচরণের ক্ষেত্রেও করা হচেছ ট্যাক্স প্রদানের ব্যবস্থা; মান্দিদের স্বাভাবিক জীবন যাত্রা চরমভাবে বিপন্ন করে দেয়ার এক সুচতুরপ্রক্রিয়া। নিজ হাবিমা-তে হাবাহু.আ করার অধিকার মান্দিরা হারিয়েছে বহু আগেই। এই হচ্ছে আজ মধুপুরের মান্দিদের নিজ ভূমির উপর অধিকারের অবস্থা। অন্যদিকে সংস্কৃতিগত দিক দিয়েও তাদের অবস্থা অত্যন্ত শোচণীয়। বিভিন্ন কারনে মান্দি দাকবেওয়াল (সংস্কৃতি) আজ তার স্বকীয় উপাদন হারানোর মাধ্যমে রিক্ত ও নিঃস্ব হতে বসেছে। তবে মান্দি দাকবেওয়ালের(সংস্কৃতির) স্বকীয়তা হারানোর পিছনে ভিনদেশী ধর্ম এবং সেই ধর্মাশ্রিত সাংস্কৃতিক আগ্রাসনই সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রত্যক্ষ ভূমিকা পালন করেছে। ১৮৬৩ সালের আগেও মান্দি জাতির সবাই ছিল তাদের নিজস্ব সাংসারেক ধর্মের অনুসারি। তারপর ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শক্তির হাত ধরে খ্রিস্টান মিশনারিরা তাদের ব্যাপক তৎপরতা চালায় মান্দি সমাজে বিভিন্ন ভাবে বিভিন্ন কৌশলে। মূল জনধারা থেকে সবদিক দিয়ে সুযোগ-সুবিধা বঞ্চিত মান্দিরা নানান কিছুর প্রলোভনে একসময় বাধ্য হয় তাদের সর্বপ্রাণবাদী (Animism) সাংসারেক ধর্ম ত্যাগ করে খ্রিস্টান ধর্মে দীক্ষা নিতে। খ্রিস্টান ধর্মে দীক্ষিত হওয়ার পরে এরা বাধ্য হয়েই ব্রারা, দুগনি, তাতারা, রাবুগা, মিসি সালজং, সুসিমি সালজং, চুরাবুদি, রাক্কাশি, জগু, গুইরা সহ অসংখ্য দেব-দেবতার উপর থেকে বিশ্বাস হারিয়ে এক যীশু খ্রিস্টের উপর বিশ্বাস স্থাপন করে। বর্তমানে মান্দিদের শতকরা ৯৫ জনই খ্রিস্টান ধর্মের অনুসারি। মধুপুরের মান্দিদের অবস্থাও এর থেকে বিচ্ছিন্ন কিছু নয়। মধুপুরের মান্দিদের বর্তমান দুই প্রজন্ম জানেনা তাদের নিজস্ব সাংসারেক ধর্মের প্রাচীন রীতিনীতি-সংস্কার এবং বিভিন্ন দেব-দেবতাদের নাম। তারা এখন পুরোদস্তর খ্রিস্টান বনে গেছে। খ্রিস্টান রীতি-নীতি, সংস্কারকে বেশ ভালোমতই আত্মস্থ করে নিয়েছে । তবে মধুপুরে এখনো বেশ কয়েকজন প্রবীন মান্দি নারী-পুরুষ নানান প্রতিকুল পরিবেশ-প্রতিবেশের মধ্যেও তাদের প্রথাগত সাংসারেক ধর্মকে আগলে রেখেছে দুরন্ত সাহসিকতার সাথে। নিজেদের সর্বোচ্চ আন্তরিকতা, বিশ্বাস, ধৈর্য্য ও সাহস নিয়ে দৈনন্দিন জীবনে ধরে রেখেছে সাংসারেক ধর্মের বিভিন্ন রীতি-নীতি,আচার-উপাচার। মধুপুরের এই সাংসারেক মান্দিরা তাদের যুগসঞ্চিত ধর্মীয় বিশ্বাসের সাথে তাদের উত্তরসূরীদের পরিচয় করিয়ে দেবার লক্ষ্যেই প্রায় ৫০ বছর পর গত মার্চ মাসে চুনিয়া গ্রামে ৩ দিন ব্যাপী আয়োজন করেছিল গালমাকদু.আ-র। গালমাকদু.আ কে কেন্দ্র করে চুনিয়া গ্রাম ও তার আশেপাশের গ্রাম থেকে সাংসারেক-রা এসে জড়ো হতে থাকে আয়োজনের প্রধান উদ্যোক্তা জনিক নকরেকের বাড়িতে। প্রবল উৎসাহ উদ্দীপনায় সবাই মিলে একে একে তৈরী নকমং (মান্দিদের ঐতিহ্যবাহী প্রধান ঘর),এবং তল্লা ওয়া (তল্লা বাঁশ) দিয়ে রাক্কাশি, পচ্চিম, তাতারা, মিসি সালজং, সুসিমি সালজং, জগু, বাগবা, চুরাবুদি-র কাঠামো। খেজুরের ডাল দিয়ে ঘিরে তৈরী করা হয় গুড়খা (পূজা স্থল) এবং যোগাড় করা হয় মাটির নতুন হাড়ি, দেবতাদের উৎসর্গ করার জন্য ওয়াক (শূকর), দো (বাচ্চা মোরগ),ব্রিং (বন) থেকে সংগ্রহ করা হয় ষ্ঠেং (এক ধরনের বন আলু) সহ আমুয়া-র অন্যান্য উপকরণ। তারপর তিনদিন ধরে একে একে পালন করে রাক্কাশি, চুরাবুদি, বাগবা, পচ্চিম, জগু, গুইরা, মিসি সালজং, সুসিমি সালজং, তাতারা রাবুগার ভিন্ন ভিন্ন আমুয়া। প্রত্যেক দেবতার আমুয়া-র জন্য আলাদা আলাদা মন্ত্র, নিয়ম-রীতি, ভোগ সামগ্রী রয়েছে, রয়েছে তাদের জন্য আলাদা আলাদা জীব বলি দেওয়ার রীতি। প্রতিটি মন্ত্রের জন্য রয়েছে আলাদা আলাদা সুর। মান্দি খামাল (পুরোহিত) জনিক নকরেক অত্যন্ত সুচারু ভাবে বিভিন্ন আমুয়া পরিচালনা করেন। সারারাত ধরে আদুরি , রাং, দামা, নাথোকের তালে তালে শেরেনজিং, রেরে, আজিয়া-র সুর মূর্ছণায় চলে ঐতিহবাহী বিভিন্ন নাচ এবং অনবরত চু পান ; চলে বলি দেওয়া দো (মোরগ), ওয়াক (শূকর), মি (ভাত) দিয়ে ভোজের ব্যবস্থা। এভাবে নানান আচার-উপাচার-আমুয়া ও রীতি-নীতি অত্যন্ত সর্তকতার সাথে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পালিত হয় সাংসারেক-দের আয়োজিত গালামাকদু.আ-তে। মধুপুরের সাংসারেক মান্দিরা তাদের পূর্ব পুরুষেরা যে সাংস্কৃতিক উপাদান তুলে দিয়ে গিয়েছিল তাদের কাঁধে তারই বার্তা উত্তরসূরীদের কাছে পৌঁছে দিতে এক প্রাণান্তকর অভিপ্রায় হচ্ছে এই গালমাকদু.আ-র আয়োজন। দীর্ঘদিন পর গালমাকদু.আ আয়োজনের প্রতিটি মন্ত্র, আমুয়া, আচার-উপাচারে যেন বারবার প্রতিধ্বনিত হয়েছে মান্দি জাতির নিজ ভূমি ও দাকওেয়াল রক্ষার এক তীব্র আকাঙ্খা। মান্দিরা জানে চারপাশের নানামুখী বাজারি আগ্রাসনের মুখে তাদের দাকবেওয়াল এর অমূল্য সম্পদ গুলো হয়ত চিরতরে হারিয়ে যাবে আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই। মান্দি দাকবেওয়ালের এই সংকটময় মূহর্ুতে সাংসারেক-রা তাকিয়ে আছে তাদের উত্তরসূরীদের মুখপানে, কেননা একমাত্র এই উত্তরসূরীরাই পারে অসীম শক্তি-সাহস-ধৈর্য্য-ত্যাগ-দৃঢ় মনোবল নিয়ে চারপাশের যাবতীয় প্রতিকূল পরিবেশ-প্রতিবেশের সাথে লড়াই করে মান্দি দাকবেওয়াল হারিয়ে যাবার সমস্ত পথকে চিরতরে রুদ্ধ করে দিতে; নিজ দাকবেওয়াল নিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে নিজস্ব মান্দি জাতিগত পরিচয়ে। কেননা নিজস্ব সংস্কৃতিগত ঐতিহ্যের বহমানতাই পারে কোন জাতির জনসাধারনের মধ্যকার ভ্রাতৃত্ববোধ কে চিরঞ্জীব রাখতে এবং সর্ব্বোপরি ঐ জাতিসত্বার এগিয়ে যাবার বন্ধুর পথ-পরিক্রমাকে সুগম করতে।
(This article was published in `Khola Chokh’-vol.-2, issue-3,editor-Khokan Ritchil; published by Prograssive Garo Students Society;Dhaka, August 2004)
Tuesday, August 21, 2007
Sunday, August 19, 2007
Adibashi Loko Utsab in Rajshahi
Ahsan Habib, back from Rajshahi
Indigenous cultural diversity in Bangladesh was celebrated with music, dance, photo exhibition and discussion at the Adibashi Loko Utsab held recently in Rajshahi. The aim was to encourage harmony by incorporating their language and ethnic identity.
The three-day event, jointly organised by Jatiyo Adibashi Parishad and Ashtha, was held at Bhubon Mohon Park, Rajshahi with the slogan 'Amader bhasha o porichoye jago Bangladesh'. Renowned litterateur Hassan Azizul Haque inaugurated the festival while advocate Sultana Kamal attended as chief guest. Anil Marandi of Jatiyo Adibashi Parishad presided over the programme.
Participants from different ethnic groups -- Santal, Oraon, Munda, Mahali, Mandi, Rajbangshi, Rajoar, Bhuimali -- from Dinajpur, Naogaon, Natore, Chapainawabganj, Rajshahi, Bogra and Gazipur, and representatives of civil society and mass media took part in the celebration and showed support for the solidarity. Bengalis, the majority, also joined the utsab. "We have to embrace diversity and come together as one" -- was the theme of the festival.
According to Rabindranath Soren, general secretary of Jatiyo Adibashi Parishad, the festival was a point of convergence to share their strong, proud and lasting culture with the wider community. "The festival will contribute to enhance cultural self-expression and interaction. Hopefully it will also bridge the cultural gap between people of different ethnic identities in the country," he said. The festival further called for constitutional recognition of their ethnic identities.
Performers at the festival represented both traditional and modern aspects of indigenous cultures. Traditional dong dance and music, karam dance, dasai dance and jhumur (also called jhumer) dance performance along with modern songs and theatrical performance were attempts to identify and showcase the heritage as well as the significant shift that has been going on within indigenous cultures.
Five-discussion sessions titled 'Whose Language? Whose Culture?? Whose State???' 'Globalisation vs Freedom', 'Indigenous Peoples' Art, Literature and National Conscience', 'Contribution of Indigenous people in the Liberation War' and 'Water-Forest-Land Rights of the Indigenous Peoples in Bangladesh' were held during the festival. Pavel Partha, A K M Masud Ali, Sharmeen Murshid, Ayub Hossain and Professor Saidur Rahman Khan presented the keynote papers respectively.
Mrittika, a magazine on issues regarding indigenous communities arranged a photo exhibition titled Bolshal Bringni Mandirang (Mandis of sal forest) highlighting the culture, lifestyle and struggles of Mandis in Madhupur, Tangail.
The festival ended with a colourful rally.
Source: The Daily Star, April 20, 2007
www.thedailystar.net/2007/04/20/d704201401116.htm - 6k -
An array of photographs at Jahangirnagar University
Emran Hossain, JU Correspondent
A snapshot can tell a story. A series of snapshots can capture communities, livelihoods and lifestyles. This was the impression of many a viewer at an exhibition held at Shaheed Minar premises, Jahangirnagar University (JU) recently.
Organised by Mrittika, a magazine on rural lifestyle and heritage, the display narrated stories through images accompanied with captions.
About 80 photographs were put on display during the two-day exhibition titled Bolshal Bringni Mandirang (Shalboner Mandira), where students became aware of the discrimination against a minority community -- Mandis.
Rajkumar, Probir Kumar Sarkar and Ripon Chakma -- three freelance photographers of JU, have excelled in capturing memorable moments in the lives of the subjects.
The fight against land encroachment, the struggle to establish community rights and to uphold the cultural heritage are the predominant themes. Deforestation is depicted in Ekjon Garjon, the only photograph with a title in the exhibition, which highlights the reality of the forests now. Once a deep woodland, the sal forest in Modhupur is being occupied by non-local trees like akashmoni and eucalyptus. A garjon tree still survives alone, with all its profound pride and beauty -- despite practices of cultivating pineapple or banana and cutting down the forest.
Other subjects, such as a day in the life of a Mandi van-puller forced to leave his ancestral occupation and adopt an alien one, birth of the next generation, a smiling Mandi girl, are effectively captured in the frame with due attention to colour and light. Traumatic cultural and religious conflicts have also been depicted through a series of photographs.
Source: The Daily Star, 27 December 2006
www.thedailystar.net/2006/12/27/d612271403120.htm - 5k -
Saturday, August 18, 2007
রাজশাহীতে তিনদিনব্যাপী বর্ণাঢ্য আদিবাসী লোক উrসব
বিশেষ প্রতিবেদক
১৩ এপ্রিল, রাজশাহীঃ বৃহস্পতিবার ১২ এপ্রিল থেকে বিভাগীয় শহর রাজশাহীর ভূবন মোহন পার্কে শুরু হয়েছে আদিবাসী লোক উrসব। তিনব্যাপী এই উrসবের উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক। জাতীয় আদিবাসী পরিষদ ও আস্থার যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই উrসবের প্রতিপাদ্য হচ্ছে 'আমাদের ভাষা ও পরিচয়ে জাগো বাংলাদেশ'। উদ্বোধনী দিনের আলোচনাসভার প্রথম পর্বে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন পাভেল পার্থ এবং দ্বিতীয় পর্বের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এ কে এম মাসুদ আলী। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হাসান আজিজুল হক, সুলতানা কামাল, ডঃ চৌধুরী সারওয়ার জাহান, রাখী ম্রং, সারা মারান্ডী, দীপায়ন খীসা, সুষ্মিতা চক্রবর্ত্তী, মোয়াজ্জেম হোসেন, দেবাশীষ দেবু, প্রমুখ। আলোচনাসভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সভাপতি অনিল মারান্ডি এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রবীন্দ্রনাথ সরেন। আলোচনা সভায় হাসান আজিজুল হক বলেন, দেশের এক বিরূপ সময়ের মধ্যে এই আদিবাসী উrসব আয়োজিত হচ্ছে। আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতির বিষয়টি উপেক্ষিত থাকছে। দেশে এখন একটি সঙ্কট বিরাজ করছে। এক অনিশ্চয়তার পথে আমরা এগুচ্ছি। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এডভোকেট সুলতানা কামাল বলেন, দেশের সংবিধানে আদিবাসীদের স্বীকৃতি দেয়া হয়নি। এটি একটি ভুল সিদ্ধান্ত। দেশের একজন মানুষ হিসেবে একজন নাগরিক হিসেবে আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি দাবী করে তিনি বলেন, আদিবাসীদের অধিকার রক্ষায় সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সুষ্মিতা চক্রবর্ত্তী বলেন, আদিবাসীদের সমাজ সংস্কৃতি এখন হুমকীর মুখে। বিশ্বায়নের যুগে আদিবাসী সংস্কৃতি-ঐতিহ্য ও অস্তিত্বকে আঘাতপ্রাপ্ত হচ্ছে। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতিগুলো বিশ্বায়নের সুযোগ পাচ্ছে না। বরং বিশ্বায়ন তাদের কৃষ্টি, সংস্কৃতি সবই গ্রাস করছে। আলোচনা সভা শেষে সাঁওতালদের ঐতিহ্যবাহী গান, নাচ ও নাটক পরিবেশিত হয়। এই উrসব ১৪ এপ্রিল পয়লা বৈশাখ পর্যন্ত চলবে। প্রতিদিনই থাকবে আলোচনাসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। পয়লা বৈশাখে আদিবাসীদের বর্ণাঢ্য বর্ষবরণ শোভাযাত্রা বের করা হবে। এছাড়াও উrসবে জাতিতাত্ত্বিক ও লোকায়ত জ্ঞান বিষয়ক পত্রিকা 'মৃত্তিকা'র উদ্যোগে মধুপুরের মান্দিদের জীবন ও সংগ্রামের আলোকচিত্র প্রদর্শন করা হয়। আদিবাসীদের ভাষা ও পরিচয়ে জেগে ওঠার আহবান জানিয়ে উrসবের প্রথম দিনের অনুষ্ঠান উপস্থাপক হরেন্দ্র নাথ সিং প্রতিদিনের অনুষ্ঠানে সবাইকে যোগদানের আহবান জানান।
source: www.ukbengali.com
১৩ এপ্রিল, রাজশাহীঃ বৃহস্পতিবার ১২ এপ্রিল থেকে বিভাগীয় শহর রাজশাহীর ভূবন মোহন পার্কে শুরু হয়েছে আদিবাসী লোক উrসব। তিনব্যাপী এই উrসবের উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক। জাতীয় আদিবাসী পরিষদ ও আস্থার যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই উrসবের প্রতিপাদ্য হচ্ছে 'আমাদের ভাষা ও পরিচয়ে জাগো বাংলাদেশ'। উদ্বোধনী দিনের আলোচনাসভার প্রথম পর্বে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন পাভেল পার্থ এবং দ্বিতীয় পর্বের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এ কে এম মাসুদ আলী। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হাসান আজিজুল হক, সুলতানা কামাল, ডঃ চৌধুরী সারওয়ার জাহান, রাখী ম্রং, সারা মারান্ডী, দীপায়ন খীসা, সুষ্মিতা চক্রবর্ত্তী, মোয়াজ্জেম হোসেন, দেবাশীষ দেবু, প্রমুখ। আলোচনাসভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সভাপতি অনিল মারান্ডি এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রবীন্দ্রনাথ সরেন। আলোচনা সভায় হাসান আজিজুল হক বলেন, দেশের এক বিরূপ সময়ের মধ্যে এই আদিবাসী উrসব আয়োজিত হচ্ছে। আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতির বিষয়টি উপেক্ষিত থাকছে। দেশে এখন একটি সঙ্কট বিরাজ করছে। এক অনিশ্চয়তার পথে আমরা এগুচ্ছি। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এডভোকেট সুলতানা কামাল বলেন, দেশের সংবিধানে আদিবাসীদের স্বীকৃতি দেয়া হয়নি। এটি একটি ভুল সিদ্ধান্ত। দেশের একজন মানুষ হিসেবে একজন নাগরিক হিসেবে আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতি দাবী করে তিনি বলেন, আদিবাসীদের অধিকার রক্ষায় সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সুষ্মিতা চক্রবর্ত্তী বলেন, আদিবাসীদের সমাজ সংস্কৃতি এখন হুমকীর মুখে। বিশ্বায়নের যুগে আদিবাসী সংস্কৃতি-ঐতিহ্য ও অস্তিত্বকে আঘাতপ্রাপ্ত হচ্ছে। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতিগুলো বিশ্বায়নের সুযোগ পাচ্ছে না। বরং বিশ্বায়ন তাদের কৃষ্টি, সংস্কৃতি সবই গ্রাস করছে। আলোচনা সভা শেষে সাঁওতালদের ঐতিহ্যবাহী গান, নাচ ও নাটক পরিবেশিত হয়। এই উrসব ১৪ এপ্রিল পয়লা বৈশাখ পর্যন্ত চলবে। প্রতিদিনই থাকবে আলোচনাসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। পয়লা বৈশাখে আদিবাসীদের বর্ণাঢ্য বর্ষবরণ শোভাযাত্রা বের করা হবে। এছাড়াও উrসবে জাতিতাত্ত্বিক ও লোকায়ত জ্ঞান বিষয়ক পত্রিকা 'মৃত্তিকা'র উদ্যোগে মধুপুরের মান্দিদের জীবন ও সংগ্রামের আলোকচিত্র প্রদর্শন করা হয়। আদিবাসীদের ভাষা ও পরিচয়ে জেগে ওঠার আহবান জানিয়ে উrসবের প্রথম দিনের অনুষ্ঠান উপস্থাপক হরেন্দ্র নাথ সিং প্রতিদিনের অনুষ্ঠানে সবাইকে যোগদানের আহবান জানান।
source: www.ukbengali.com
Subscribe to:
Posts (Atom)